Home সারাদেশ আজ সিডর দিবস ভয়াল সিডরের আঘাতের চিহ্ন এখনো বয়ে বেড়ায় কলাপাড়াবাসী

আজ সিডর দিবস ভয়াল সিডরের আঘাতের চিহ্ন এখনো বয়ে বেড়ায় কলাপাড়াবাসী

by shikkhasamachar
0 comment

আজ সিডর দিবস
ভয়াল সিডরের আঘাতের চিহ্ন এখনো বয়ে বেড়ায় কলাপাড়াবাসী —– – —-
১৬ বছর পরেও অরক্ষিত বেড়িবাঁধ

মো. সাইদুর রহমান সাইদ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ-

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া,মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে চেনা জনপদ মুহূর্তে পরিণত হয় অচেনা এক ধ্বংসস্তুপে। পানির স্রোত আর বাতাসের তীব্রতায় সহায় সম্ভল হারিয়ে হতবিহ্বল এ জনপদের লোক। সেদিন যে ক্ষত করে দিয়েছে তান্ডবকারী সিডর তার ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াতে হয় কলাপাড়া, মহিপুর, লালুয়া, নীলগঞ্জ ও টিয়াখালী ইউনিয়নবাসীদের।

১৬ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল-পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। দফায় দফায় ভাঙ্গাবেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন বেশ কয়েকবার। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি, দেশী-বিদেশী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতবার পরিদর্শন করেছেন তার হিসাব দিতে পারছেন না বসবাসকারীরা। কিন্তু সেই ভাঙ্গা বেড়িবাঁধের টিকসই উন্নয়ন হয়নি এখনও। বছরের পর বছর জোড়াতালি দেয়া হচ্ছে। যা বর্ষা মৌসুমে ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করে বাড়ি-ঘর তলিয়ে যায়। শত শত একর ফসলি জমি নষ্ট হয়ে গেছে। প্রকৃত কৃষকরা চাষের জমি হারিয়ে এখন জেলে পেশায় নিয়োজিত। জোয়ার-ভাটার সাথে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে অন্যত্র চলে গেছে বেশ কিছু পরিবার। সরেজমিনে গেলে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথাও বলতে চায় না তারা। মিডিয়া কর্মীদের বক্তব্য দিতে দিতে ক্লান্ত তারা। তাদের ভাষ্য ‘সাংবাদিক আয় ছবি তোলে, ভিডিও করে। মোগো ভাগ্যের তো পরিবর্তন হয় না।’ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে তারা কোন লাভ দেখছেন না। প্রলয়ংকারী সিডরের ৬ বছর পার হলেও সেরাতের ভয়াল দৃশ্য আজও তাড়িয়ে বেড়ায়।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গৈয়াতলা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুল বেড়িবাঁধ নাই। কিছু কিছু যায়গায় বাঁধ থাকলেও তা অর্ধেক আছে৷ যে কোন মূহুর্তে ভেঙে বিলিন হয়ে যাবে যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগের আগমন হয়।

সিডরের ১৬ বছর অতিবাহিত হলেও আন্ধারমানিক নদীর মোহনার তীরবর্তী এলাকায় বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় এখনো দুর্যোগ ঝুঁকিতে দিন পার করছে শত শত পরিবার। হতদরিদ্র পরিবারগুলো সিডরের ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেনি ষোল বছরেও।

এদিকে কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার, মহিপুর, চম্পাপুর ও লালুয়া ইউনিয়নের বাঁধ অরক্ষিত থাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাস করা পরিবারগুলো রয়েছে এখনো ঝুঁকিতে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০০৭ সালের সিডরে কলাপাড়া উপজেলায় ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে এক হাজার ৭৮ জন। নিখোঁজ রয়েছে সাত জেলে। উপজেলায় গবাদিপশু মারা গেছে চার হাজার ৯৪৪টি। ক্ষতি হয়েছে ৫৫৩টি নৌযানের। বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় কলাপাড়ার ধুলাসার, লালুয়া, মহিপুর, লতাচাপলী ও চম্পাপুর ইউনিয়নে বেড়িবাঁধের বাইরে সাগর ও নদীর তীরঘেঁষে প্রায় তিন হাজার পরিবার বসবাস করছে চরম ঝুঁকি নিয়ে।

গৈয়াতলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আরিফ বিল্লাহ জয় বলেন, আমরা যে কোন ঝড় বন্যায় আতঙ্ক নিয়ে থাকি। সাধারণ জোয়ারে পানি ভিতরে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। আমরা ত্রান চাইনা এখন আর বাঁচার অধিকার চাই। শক্ত টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।

একই এলাকার বাসিন্দা আল-আমিন বলেন, শক্ত বেড়িবাঁধ মেরামত করে দিলে আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারতাম। যে কোন হালকা বাতাসে আমাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। আমরা আর কত অপেক্ষা করলে বেড়িবাঁধ হবে।

এবিষয়ে কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (চঃদাঃ) মো. খালেদ বিন ওলীদ বলেন, আমরা অনেক বেড়িবাঁধ ইতিমধ্যে মেরামত করে ফেলছি। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গৈয়াতলার কিছু এলাকায় ভাঙ্গন আছে তাও শীঘ্রই মেরামত করার সর্বোচ্চ প্রচেস্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। # # #

 

You may also like

Leave a Comment